শতাব্দী ওয়াদুদ এর জীবনী - Shatabdi Wadud Biography



 শতাব্দী ওয়াদুদ  এর জীবনী - Shatabdi Wadud Biography


এই কাহিনী হলো এমন একজন মানুষের যিনি ইতিমধ্যে বহুমাত্রিক চরিত্রে চমৎকার বাস্তবিক অভিনয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশের মঞ্চ, টেলিভিশান এবং বিশেষ করে চলচিত্র শিল্পকে সমৃদ্ধ করেছেন এবং নিজেকে একজন ১ম সারির সফল অভিনেতা হিসাবে প্রতিষ্টিত করেছেন । তিনি আমাদের সবার প্রিয় শতাব্দী ওয়াদুদ । তার অভিনয়ে দর্শরা মুগ্ধ হয়ে বলেন এটা অভিনয় মনে হয়নি, মনে হচ্ছিল পুরোই বাস্তব ।

শতাব্দী ওয়াদুদ মঞ্চ নাটকের মাধ্যমে তার অভিনয় জীবন শুরু করেন এবং পরবর্তীতে তিনি টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। তার অভিনীত প্রথম নাটক শঙ্কিত পদযাত্রা যা বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচারিত হয়। তার অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র হলো ফুল কুমার। তিনি ২০১১ সালে গেরিলা চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য ৩৬তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ খলচরিত্র অভিনেতা হিসাবে জাতীয় চলচিত্র পুরস্কার অর্জন করেন ।

শতাব্দী ওয়াদুদ ঢাকায় জন্ম গ্রহন করেন ।বাবা ছিলেন সরকারী অফিসের কর্মকতা এবং সে সুবাধে তার শৈশব কাটে ঢাকার কলাবাগানের কলোনিতে । তিন ভাইয়ের মধ্যে তিনি সবার বড়।ছোট দুই ভাই সমাপ্তি ওয়াদুদ ও অদিতি ওয়াদুদও মিডিয়ায় কাজ করেন।

ধানমন্ডি সরকারী বয় হাই স্কুল এ স্কুল জীবন ও সরকারী তিতুমীর কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাশ করেন । ছোট বেলা থেকেই বাবা মায়ের সাথে প্রচুর ছবিদেখেছেন হলে গিয়ে এবং তখন থেকেই অবচেতন মনে অভিনয়ের বীজটা বপন হয়ে যায় ওয়াদুদএর ।

তিনি ১৯৮৫ সালে অষ্টম-নবম শ্রেণীতে পড়ার সময়ই মঞ্চ নাটকে কাজ শুরু করেন। ১৯৯২ সালে "আর্তনাদ" মঞ্চদলের সাথে অভিনয় শুরু করেন। তার অভিনয়ের পথপ্রদর্শক তার চাচা অভিনেতা শহীদুল আলম সাচ্চু। পরবর্তীতে ১৯৯৭ সালে তিনি "প্রাচ্যনাট্য" মঞ্চদলের সাথে কাজ শুরু করেন।
শতাব্দী ওয়াদুদ নাট্যনির্মাতা পান্থ শাহরিয়ারের বোন স্নাতা শাহরিনকে বিয়ে করেন। তিনি একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে শিক্ষকতা করেন। ছোটবেলা থেকে তিনি নৃত্যের সাথে জড়িত। এছাড়া ও তিনি "প্রাচ্যনাট্য" মঞ্চদলের সাথে সম্পৃক্ত। তাদের একমাত্র ছেলে, নাম শ্রেয়ান।

১৯৯৯ সালে খ.ম. হারুন পরিচালিত  শঙ্কিত পদযাত্রা নাটকের মাধ্যমে টেলিভিশন নাটকে অভিনয় শুরু করেন শতাব্দী ওয়াদুদ । প্রথম নাটকেই তার অভিনয় সকলের নজরে আসে এরপর তিনি একে একে অভিনয় করেন ,  মোহনা, বন্ধুবরেষু, সাইকেলের ডানা, বরিশালের মামা ভাগ্নে, একরাতে নন্দীনীর সাথে, কটবিহাইন্ড, লাভ এন্ড লাইভ ইত্যাদি নাটকে । এই নাটকগুলো তার যাত্র শুরুর পথে ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছে।

২০০২ সালে আশিক মোস্তফা পরিচালিত “ফুল কুমার”চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে বড় পর্দায় প্রথম দেখাযায় তাকে ।প্রথম ছবিতে অভিনয়ের পর চলচিত্রে অভিনয়ের প্রতি ঝোক বাড়ে এই অভিনেতার, কয়েকটা বছর কেটে গেল , ভাল কোন অফার পাচ্ছিলেন না, এর ফাকে নিজেকে আরও তৌরি করতে থাকেন, এবং ছয় বছর পরে ২০০৮ আবারও অভিনয় করেন আবু সাইয়ীদ পরিচালিত রূপান্তর চলচ্চিত্রে একজন তীরন্দাজের চরিত্রে। ২০১১ সালে তানিম নূর পরিচালিত ফিরে এসো বেহুলায় অভিনয় করেন। এছাড়া একই বছর বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধভিত্তিক দুটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। প্রথমটি রুবাইয়াৎ হোসেন পরিচালিত মেহেরজান এবং অপরটি নাসির উদ্দীন ইউসুফ পরিচালিত গেরিলা। গেরিলা চলচ্চিত্রে পাকিস্তানি মেজর সরফরাজ চরিত্রে চমৎকার দূর্দান্ত অভিনয় করে সবার প্রসংশা কুড়ান এবং এই ছবিতে অভিনয়ের জন্য তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ খলচরিত্রে অভিনেতার পুরস্কার অর্জন করেন। এবং এই ছবিটি ছিল তার ক্যারিয়ারের টানিং পয়েন্ট । এরপর থেকে তাকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি একে একে অভিনয় করতে থাকেন অনেকগুলো ছবিতে ।

এরপর ২০১৩ সালে নায়ক রাজ রাজ্জাক পরিচালিত “আয়না কাহিনী” চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন।
একই বছর ঈদুল ফিতরে কট বিহাইন্ড, লাভ এন্ড লাইফ, স্টোরি, অপরাধ বিষয়ক গল্প এবং দি বেডশিট নাটকে অভিনয় করেন।

২০১৪ সালে তানভীর মোকাম্মেল পরিচালিত বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র জীবনঢুলীতে অভিনয় করেন।১৯৭১ সালে চুকনগর গণহত্যার প্রেক্ষাপটে চলচ্চিত্রটি নির্মিত হয়।এই ছায়াছবিতে তিনি জীবনকৃষ্ণ দাস নামে এক ঢুলীর ভূমিকায় অভিনয় করেন এবং তার অভিনয় সবারকাছে প্রসংশিত হয় । একই সাথে নাটক, গুম, দহন এবং টেলিফিল্ম বৃত্তবন্ধিতে ও চমৎকার অভিনয় করেন । ২০১৫ সালে মুক্তি পায় রিয়াজুল রিজু পরিচালিত বাপজানের বায়স্কোপ চলচিত্রটি। এতে তিনি একজন বর্গাচাষী ও বায়স্কোপওয়ালা চরিত্রে দূর্দান্ত অভিনয় করেন যা সকলের প্রশংসা কুড়িয়েছিল । একই বছর বিষ নামের আরও একটি ছবিতে তাকে দেখাযায় ।

২০১৬ সালে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে তার রচিত ছোটগল্প অবলম্বনে নির্মিত মুক্তির উপায় নাটকে ফকির চাঁদ চরিত্রে অভিনয় করেন।

২০১৬ সালে সায়েম জাফর ইমামী পরিচালিত “রুদ্র দ্যা গংস্টার” চলচিত্রে গোয়েন্দা চরিত্রে অভিনয় দর্শকরা পছন্দ করেন । একই বছর তৌকির আহমেদ পরিচালিত আন্তর্জাতিক পুরস্কার বিজয়ী জনপ্রিয় চলচিত্র “অজ্ঞাতনামায়” একজন ওসি চরিত্রে তার অভিনয়ও প্রশংশণীয় হয় এবং পিএ কাজল পরিচালিত চোখের দেখা এবং তানিম রহমান অংশু পরিচালিত “আদি” চলচ্চিত্রে খল চরিত্রে অভিনয় করেতে দেখাযায় এই গুনী অভিনেতাকে।

২০১৭ সালে মুক্তি পায় বহুল প্রতিক্ষিত বিগবাজেটের চলচিত্র দিপংকর দিপন পরিচালিত “ঢাকা এ্যাটাক” যাতে তিনি গোয়েন্দা বাহিনীর চৌকষ কর্মকর্তার চরিত্রে দূর্দান্ত অভিনয় করে প্রশংসায় ভাসছেন ।  এই ছবিটি বাংলাদেশের চলচিত্রের ইতিহাসের সবচেয় সুপাটহিট ব্যবসা সফল চলচিত্র হিসাবে ইতিহাসের খাতায় নাম লিখিয়েছে । উল্লেখ্যযে মুক্তি পর ২ সপ্তাহে ছবিটি আয় করে প্রায় ৬ কোটি টাকাও বেশি ।

বর্তমানে টাইট শিডিউলের মধ্যে সময় কাটাচ্ছেন এই গুনী অভিনেতা হাতে রয়ছে অনেক কাজ, নির্মানাধীন রয়েছে, পায়ারা এবং দাগ নামের  ২টি চলচিত্র যা ২০১৮ সালে মুক্তি পাবে ।
এই টেলেনটেড অভিনেতা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও মোটামুটি আলোচিত, এখন পর্যন্ত ফেইসবুকে তাকে প্রায়  ২৩ হাজারেরও বেশি লোক ফরো করেন ।

শতাব্দী ওয়াদুদ এর পারিশ্রমিক ২০ থেকে ১০ লক্ষ টাকার মধ্যে । অভিনয়ই তার ধ্যন গ্যান সবকিছু।অভিনয়ের মধ্যেই বেচে থাকতে চান তিনি......................

অবসরে পরিবার ও বন্ধুদের সাথে আড্ডাদিতে খুব পছন্দ করেন । শতাব্দী ওয়াদুদ অভিনেতা নাহলে ক্রিকেটার হতেন। ক্রিকেট প্রিয় এই অভিনেতার প্রিয় খেলোয়ার মাশরাফি ।

ওয়াদুদ তার ইউনিক এবং দুর্দান্ত বিভিন্নধর্মী চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে অনেক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন এবং কোটি দর্শকের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন। লাইফ স্টোরি বাঙলার পক্ষ থেকে তার ভবিষ্যত সাফল্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি।

ভিডিওটি ভাল লাগলে অবশ্যই একটা লাইক দিবেন কারন এটাই হলো আমার অনুপ্রেরনা....এবং বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন । পরবর্তীতে কার জীবন কাহিনী দেখতে চান তা কমেন্টে জানাবেন । সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।

You can follow Shatabdi Wadud on Social Media [Facebook]:
Shatabdi Wadud Facebook Link: https://www.facebook.com/satabdi.wadud

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ